নিউজ সোনারগাঁ টুয়েন্টিফোর ডটকম: ফিল্মি কায়দায় এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করেছেন সোনারগাঁ উপজেলার কাচপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ দলীয় চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর।
গত ১৩ অক্টোবর বিকালে কাচপুর হাইওয়ে থানার সামনেই এই ঘটনা ঘটে । ব্যবসায়ী নূর হোসেন অভিযোগ করেন, তার ক্রয়কৃত জমি থেকে চেয়ারম্যান মোশারফের অবৈধভাবে মাটি কেটে নেয়ার প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। এদিকে ব্যবসায়ীকে ফিল্মি কায়দায় রিকশা আটকে মারধর করার সিসি টিভি ফুটেজ হস্তগত হয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে।
সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কাচঁপুর সেতুর ঢাকা- সোনারগাঁ সড়কে হাইওয়ে থানার প্রধান ফটকের সামনে বিকাল ৫ টায় ২ টি হ্যারিয়ার গাড়ী ব্যবসায়ী নূর হোসেনের রিকশা আটকে দেয়। এসময় সামনে থাকা সাদা রঙের হ্যারিয়ার থেকে মোশারফ ওমর নেমেই নূর হোসেনকে রাস্তার পাশে নিয়ে আসেন। একমুখি চলাচলের রাস্তাটিতে এসময় যানজটের সৃষ্টি হলে শত শত মানুষের সামনেই চেয়ারম্যান মোশারফ ব্যবসয়ী নূর হোসনকে বারবার গাড়ীতে তুলতে জোর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি নূর হোসেনকে মারধর শুরু করেন। নূর হোসেন এসময় সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে ২ দফায় তিনি ব্যবসায়ী নূর হোসেনকে মারধর করে গাড়ী তোলার চেষ্টা করলে নূর হোসেন আত্মরক্ষায় চেয়ারম্যান মোশরাফকে ধাক্কা দিয়ে সামনে দিকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় চেয়ারম্যান মোশারফের সাথে থাকা লোকজন নূর হোসেনকে ঝাপটে ধরে পুনরায় গাড়ীতে তোলার চেষ্টা করেন।
বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী নূর হোসেন জানান, ৩ বছর আগে আমি ইউনিয়নের চেঙ্গাইন এলাকায় পৌনে ৭ শতাংশ জমি কিনে সেখানে ভোগদখল করছি। কয়েকদিন আগে আমার জমি থেকে মোশারফ চেয়ারম্যা জোর করে মাটি কেটে নিলে আমি বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের জানাই। তারা সরেজমিনে গিয়ে সেই ঘটনার স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ নিলে চেয়ারম্যান মোশারফ আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়।
গত ১৩ অক্টোবর আমি পুনরায় মাটি কেটে নিচ্ছে এমন খবর পেলে আমি সেখানে যাচ্ছিলাম এবং বিকালে চেয়ারম্যান মোশরাফ আমার রিকশার গতি রোধকরে আমাকে মারধর করে অপহরণের চেষ্টা করে । সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে তথ্যানুসন্ধানে ঐ এলাকায় সরেজমিনে গেলে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতের কয়েক দোকানী জানিয়েছেন , বুধবার বিকালে সাদা ও কালো রঙের ২ টি দামী গাড়ী নিয়ে রিকশায় থাকা ২ জন লোকের গতি রোধ করেন চেয়ারম্যান মোশারফ। এরপর ঐ লোকটিকে (নূর হোসেন) বারবার গাড়ীতে তোলার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তার উপর মারধর শুরু করেন চেয়ারম্যান মোশারফ। এদিকে অভিযোগ সম্পর্কে চেয়ারম্যান মোশরাফ ওমরকে বৃহস্পতিবার গিয়ে এলাকায় পাওয়া যায়নি । একাধিকবার ফোন ও ক্ষুদে বার্তা দিলেও তিনি রিসিভ করেননি । পরবর্তীতে শুক্রবার পুনরায় ফোন ও ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি মোবাইলটি বন্ধ করে দেন।
তবে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোনারগাঁ থানার ওসি ( তদন্ত ) শফিকুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন , এব্যপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।